দুই বছর ধরে ভেতরে জমে থাকা যন্ত্রণা, লাঞ্ছনা আর অনিশ্চয়তার অবসান ঘটল এক ঝটকায়। মাত্র ৪০ সেকেন্ডই যথেষ্ট ছিল ব্রাজিলের ফুটবলার লুকাস পাকেতার জন্য—যার মধ্যে তিনি ফিরে পেলেন হাসি, গর্ব আর মুক্তির স্বাদ।
মারকানায় চিলির বিপক্ষে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে বদলি হিসেবে নামেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের ২৫:৫৩ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলির জায়গায় মাঠে নামেন, ২৬:২০ মিনিটে প্রথমবার বল স্পর্শ, আর ২৬:৩৩ মিনিটে লুইস হেনরিকের ক্রস থেকে দারুণ এক হেডে গোল! দুই বছরের অপেক্ষার প্রতীকী মুক্তি যেন সেই মুহূর্তেই মিলল।
গোলের পর আবেগভরা কণ্ঠে পাকেতা বললেন, ‘আমি খুশি যে নিজের আসল চেহারা প্রমাণ করতে পেরেছি। আমার সত্যি জয় হয়েছে, আর আজ আমি আবার হাসি মুখে ফুটবল খেলতে পারছি।’
তদন্ত, বিতর্ক আর অভিযোগের আঁধার শেষে তিনি এখন হালকা, মুক্ত: ‘এটা নিঃসন্দেহে এক স্বস্তি। এই সময়ে আমি পরিবার আর স্ত্রীকে আরও ভালোভাবে চিনেছি। আজ আবার নিজেকে ফিরে পাওয়া মানে কাঁধ থেকে এক বিশাল বোঝা নেমে যাওয়া।’
পাকেতার ক্যারিয়ার প্রায় থমকে গিয়েছিল ইংলিশ এফএ-র সেই তদন্তে। ম্যাচে হলুদ কার্ড পাওয়ার ঘটনায় শুরু হওয়া জুয়া কেলেঙ্কারি নিয়ে টানা দুই বছর ঝুলে ছিলেন তিনি। অবশেষে সম্প্রতি ৩০০ পৃষ্ঠার নথি প্রকাশ করে এফএ জানায়, প্রমাণগুলোতে অসঙ্গতি ছিল, আর তাই পাকেতা সম্পূর্ণভাবে মুক্ত।
সেই রায়ের পরই জাতীয় দলে ফেরা, আর ফেরা ম্যাচেই গোল—গল্পটা যেন সিনেমার মতো। তাও আবার ঘরের মাঠ মারকানায়, যেখানে একসময় ফ্ল্যামেঙ্গো জার্সি পরে খেলে বেড়াতেন।
মাত্র ১৯ মিনিট মাঠে থেকেও আলো ছড়িয়েছেন পাকেতা। ২৭ বার বল স্পর্শ, ২০ পাসের মধ্যে ১৭ সঠিক, একটি সফল ড্রিবল আর চারটি দ্বৈরথের মধ্যে জিতেছেন তিনটিতে। যেন বলতে চাইছেন—সময় নষ্ট করতে চান না আর।
দরিভালের সর্বশেষ দলে ছিলেন না, আনচেলত্তির প্রথম ডাকেও জায়গা হয়নি। এবার শুধু স্কোয়াডে ফেরা নয়, প্রমাণ করলেন তিনি আবারও আস্থার যোগ্য। সামনে বলিভিয়ার বিপক্ষে কঠিন ম্যাচ, উচ্চতার চ্যালেঞ্জ, আর পাকেতা সম্ভবত সে ম্যাচ শুরু করবেন একাদশে থেকেই।